মিয়ানমারের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করেছে উত্তর কোরিয়া
সাস নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করেছে উত্তর কোরিয়া। আরো বিক্রি করা হয়েছে রকেট লঞ্চার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করে ২০১৭ সালে প্রায় ২০ কোটি ডলার আয় করেছে উত্তর কোরিয়া। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের আরোপ করা অবরোধ উপেক্ষা করেছে তারা। জাতিসংঘের নিরপেক্ষ পর্যক্ষেকদের একটি গোপনীয় রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ ওইসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে অস্ত্রও।
ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার পরিবর্তে এতে বলা হয়েছে, এসব কয়লার উৎপত্তি হলো রাশিয়া ও চীন। উল্লেখ্য, ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতভাবে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে ২০০৬ সালে। সেই থেকে অবরোধ কার্যকর। এর মাধ্যমে পিয়ং ইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি উৎপাদন বন্ধ করার লক্ষ্য নিধারণ করা হয়। নিষিদ্ধ করা হয় উত্তর কোরিয়ার কয়লা, লোহা, সীসা, বস্ত্র, সমুদ্রজাত খাদ্য রপ্তানি। অশোধিত তেল ও শোধিত পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য আমদানির ওপরও অবরোধ দেয়া হয়। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধ লঙ্ঘন করছে উত্তর কোরিয়া। এ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ২১৩ পৃষ্ঠার রিপোর্ট লিখেছেন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা। তারা বলেছেন, বিশ্ব তেল সরবরাহ শৃংখলা ভঙ্গ করেছে উত্তর কোরিয়া। অফসোর কোম্পানি রেজিস্টার্ড করেছে। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা লঙ্ঘন করেছে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করে নি জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ান মিশন।
অন্যদিকে রাশিয়া ও চীন বার বারই বলে আসছে, তারা উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত জাতিসংঘের অবরোধ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, সিরিয়া ও মিয়ানমারের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বিষয়ক সহযোগিতা নিয়ে তদন্ত করেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সিরিয়ার সায়েন্টিফিক স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে কমপক্ষে এমন ৪০টি ঘটনা নিয়ে কাজ করেছেন পর্যবেক্ষকরা। তবে এ নিয়ে আগে কোনো রিপোর্ট করা হয় নি। সিরিয়ার ওই রিসার্চ সেন্টারটি রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি তদারক করে থাকে। পর্যবেক্ষকরা আরো বলেছেন, উত্তর কোরিয়া থেকে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এমন দুটি শিপমেন্ট অন্য কযেকটি দেশ টের পাওয়ার পর তাতে পর্যবেক্ষণ চালানো হয়েছে। ওই দুটি শিপমেন্টেই ছিল এসিড-প্রতিরোধী টাইলস, যা বড় একটি শিল্প কারখানার বড় একটি এলাকা ঢেকে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। একটি দেশ ওইসব পর্যবেক্ষকদের বলেছে, জব্দ করা শিপমেন্টে যেসব জিনিস রয়েছে তা কোনো রাসায়নিক কারখানার আভ্যন্তরীণ দেয়াল নির্মানে ব্যবহৃত হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে দিতে সম্মত হয় সিরিয়া। তবে কূটনীতিক ও অস্ত্র বিষয়ক পর্যবেক্ষকরা সন্দেহ করেন যে, গোপনে সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করেছে অথবা তারা রাসায়নিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়ার মিশন কোনো মন্তব্য করে নি। একটি দেশ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের বলেছে যে, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম পেয়েছে মিয়ানমার। এ বিষয়ে তাদের হাতে প্রমাণ আছে। সরবরাহ করা হয়েছে প্রচলিত অস্ত্র। এর মধ্যে রয়েছে বহু রকেট লঞ্চার ও ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। তবে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাউ ডো সুয়ান বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এমন কোনো অস্ত্র বিষয়ক সম্পর্ক নেই মিয়ানমারের। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন মেনে চলছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন