‘যানজটে বছরে ক্ষতি ২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা’
সাস নিউজ২৪ ডট কম : রাজধানীতে যানজট ও গাড়ির ধীরগতির কারণে প্রতি মাসে ক্ষতি হচ্ছে ২২৭ কোটি টাকা। বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। ঢাকার যানজটের তিনটি প্রধান কারণ হচ্ছে—যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে সড়কের জায়গা দখল এবং ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন। যানজট ও গাড়ির ধীরগতির কারণে এ ক্ষতি হয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘নগর পরিস্থিতি ২০১৬: ঢাকা মহানগরে যানজট-শাসনব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) গবেষণাটি পরিচালনা করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক সুলতান হাফিজ রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বিআইজিডির রিসার্চ ফেলো শাহনেওয়াজ হোসেন গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার নাঈম আহমেদ।
গবেষণা প্রতিবেদনে সড়ক নেটওয়ার্ক নিয়ে দুর্বল পরিকল্পনা, প্রাইভেট কারের ব্যবহার নিরুৎসাহিত না করা, ঢাকার দুর্বল পরিবহন ব্যবস্থাপনা এবং সরকার ও পরিবহন সংস্থাগুলোর মধ্যে দুর্বল সমন্বয়কেও যানজটের অন্তর্নিহিত কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দর থেকে পোস্তগোলা ভায়া গুলশান, মহাখালী, গুলিস্তান এবং বুড়িগঙ্গা এই ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে অপেক্ষাকৃত কম ব্যস্ত সময়ে (অফ পিক আওয়ার) গাড়ির গতিসীমা থাকে ঘণ্টায় ২২ কিলোমিটার, তবে পিক আওয়ারে যানজটের কারণে গতিসীমা কমে ঘণ্টায় নয় কিলোমিটারে দাঁড়ায়।
গাড়ির এই ধীরগতির কারণে প্রতি মাসে ২২৭ কোটি বা ২৮ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবার যাতায়াতে একজন যাত্রীকে বাড়তি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে, যার আর্থিক মূল্য জনপ্রতি ৫৩ টাকা। এটা গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয়ের অতিরিক্ত খরচ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০০৪ সালে ঢাকায় গাড়ি চলাচলের গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ২১ দশমিক ২ কিলোমিটার। ২০১৫ সালে এই গতি নেমেছে ঘণ্টায় ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার ৯৮ দশমিক ৩ ভাগ গণপরিবহন ও ৬৮ ভাগ প্রাইভেট কার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে। গণপরিবহনের অনেক চালক গাড়ি পার্কিংয়ের নিয়ম, গতিসীমা এবং গাড়ি চালানোর সময় কী কী কাগজ প্রয়োজন, সেগুলো জানেন না।
ডিএমপি, দুই সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথোরিটি (ডিটিসিএ), রাজউক এবং যাত্রীদের কেস স্টাডি, মাঠ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন