ময়মনসিংহ ও পাবনায় হচ্ছে সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহ ও পাবনায় ৩ হাজার ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দুটি পৃথক প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
আজকের সভায় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি এবং সড়ক বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। অনুমোদিত ১০টি প্রস্তাবের মোট অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৬৪০ কোটি ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৯৯৮ টাকা।
অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন জানান, আজকের সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি প্রস্তাব ছিল, চারটিরই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় ৭০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেক্টিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা ৮.১২ টাকা হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৪৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬ এর আওতায় বিল্ড ওন অপারেশন (বিওও) ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে দাইহান গ্রিন অ্যানার্জি কোম্পানি লিমিটেড, এইচ আই কোরিয়া কোম্পানি লিমিটেড এবং পাবনা সোলার পাওয়ার লিমিটেড।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০ বছর মেয়াদে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা ৮.১২ টাকা হিসেবে উদ্যোক্তা সংস্থাকে আনুমানিক ১ হাজার ৩১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬ এর আওতায় বিল্ড ওন অপারেশন (বিওও) ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি টোটাল ইরেন এস এ ফ্রান্স, নরওয়ে রিনিওবলস গ্রুপ, নরওয়ে এবং আরবান সার্ভিসেস লিমিটেড, বাংলাদেশ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
সভায় অনুমোদিত বিদ্যুৎ বিভাগের অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের প্যাকেজ নং এ-২১, লট-১ এর আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে, যার সবগুলোই রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এবং পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড এসপিসি পোলগুলো সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৩৮৮ টাকা।
এছাড়া সভায় ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো এবং বর্ধিত মেয়াদের জন্য ট্যারিফ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পন্সর কোম্পানি ভেঞ্চার অ্যানার্জি রিসোর্স লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের বর্ধিত চুক্তির মেয়াদ (চারবারে ৯ বছর) গত বছরের ১১ জুলাই শেষ হয়। পিজিসিবি কর্তৃক ভোলা জেলায় ২৩০/৩৩ কেভি ট্রান্সফরমার স্থাপনসহ চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আবার চার বছর বাড়ানোর প্রয়োজন।
পিইসি কর্তৃক স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা মূল চুক্তির ধারাবাহিকতায় ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ২০২১ সালের ১২ জুলাই থেকে চার বছর বাড়ানোর জন্য উদ্যোক্তা সংস্থার সঙ্গে ট্যারিফ কিলোওয়াট/ ঘণ্টা ২.৭১৭৬ টাকা হিসেবে ‘নো ইলেক্টিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদে স্পন্সর কোম্পানিকে ৩৮০ কোটি ৯০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। বর্ণিত প্রস্তাবে ট্যারিফ আগের তুলনায় কম হওয়ায় প্রায় ৪৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন