দুবাই বসে টিপু হত্যার পরিকল্পনা করেন মুসা -র্যাব
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেয় সুমন শিকদার ওরফে মুসা। টিপু হত্যাকা-ের ঠিক ১২ দিন আগে দুবাই চলে যায় মুসা। দুবাই বসে হত্যার পুরো ছক কষে সে। টিপুকে হত্যায় চুক্তি হয় ১৫ লাখ টাকা। এই ১৫ লাখ টাকা কে কত দেবে তাও ভাগ করে দেয় মুসা। নয় লাখ টাকা দেয় ওমর ফারুক। অবশিষ্ট ছয় লাখ টাকা দেয় গ্রেফতার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও মুসা।
শনিবার কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, দুবাই যাওয়ার আগে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায় মুসা, হুন্ডির মাধ্যমে আরও চার লাখ টাকা মুসাকে দেওয়া হয়। বাকি ছয় লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়। ছয় লাখের মধ্যে র্যাব গ্রেফতারের সময় তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা জব্দ করে। দুবাই থাকা মুসা ২০১৬ সালে রিজভী হাসান হত্যাকা-ের চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামি।
এর আগে রাতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর অভিযানে গত রাতে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে ঘটনার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ওমর ফারুক ও পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির এবং মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে নজরদারির কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারদের বরাতে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হত্যাকা-টি দেশে ঘটলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। দেশে থাকা নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন ধরে মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করতো। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর গ্রেফতার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে। পরে জাহিদুল ইসলাম টিপু গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় গ্রেফতার মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ তাকে নজরদারিতে রাখে এবং তার অবস্থান সম্পর্কে ফ্রিডম মানিককে অবহিত করে। টিপুর অবস্থান সম্পর্কে জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের তত্ত্বাবধানে কিলার কর্তৃক হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেফতার ওমর ফারুকের সঙ্গে হত্যাকা-ের জন্য ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। ওই ১৫ লাখ টাকা রিজভী হাসান হত্যাকা-ে জড়িত আসামিদের মধ্যে ওমর ফারুক ৯ লাখ এবং অবশিষ্ট টাকা নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও মুসা দেয়। দুবাইয়ে যাওয়ার সময় মুসা পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায় ও হুন্ডির মাধ্যমে মুসাকে আরও চার লাখ টাকা পাঠানো হয়। অবশিষ্ট ছয় লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন