উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হুমকিতে প্রাণভয়ে আছেন নও মুসলিমরা
নিউজ ডেস্ক:
শহীদ ইমাম উমর ফারুক হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিন পার হলেও কোনো মামলার অগ্রগতি নেই তুলাছড়িতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হুমকিতে প্রাণভয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করছে নও মুসলিমরা
সাদিকুল ইসলাম ত্রিপুরা বলেন, তুলাছড়িতে আগে মুসলিম ছিলো ১১ পরিবার। সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে ৬ পরিবার খ্রিস্টান ধর্মে ফেরত গিয়েছে। এখন উমর ফারুকের পরিবারসহ মোট ৫ পরিবার মুসলিম রয়েছে। এর মধ্যে উমর ফারুকের পরিবার চলে যাওয়ায় ৪ পরিবার রয়েছে, যাদের কেউই এখন আর এলাকায় নেই। নারেং পাড়ায় ৫ পরিবার নওমুসলিম ছিলো যাদের মধ্যে তিন পরিবার প্রাণ বাঁচাতে পূর্ব ধর্মে ফিরে গেছে। সাধু হেডম্যান পাড়ায় ৮ পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে ৬ পরিবার পূর্ব ধর্মে ফেরত গিয়েছে। শিলবান্ধা পাড়ায় ৫ পরিবার ইসলাম গ্রহণ করলেও বর্তমানে ৩ পরিবার রয়েছে।
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে আলোচিত ইমাম উমর ফারুক ত্রিপুরা হত্যাকাণ্ডের পর থেমে নেই উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। তুলাছড়ি ও আশেপাশের নও মুসলিমদেরকেও উমর ফারুকের মতো হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তারা। তাদের হুমকির মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে অত্র এলাকার অধিকাংশ নও মুসলিম ইতোমধ্যেই পূর্বের ধর্মে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। যারা ধর্মান্তরিত হয়নি তারা প্রাণভয়ে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ বোধ করছে না। নওমুসলিমদের আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে তাদেরকে হত্যার হুমকি পাঠাচ্ছে উপজাতীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ। নও মুসলিমদের দাবী, উমর ফারুক হত্যাকারীদের গ্রেফতার না করায় সন্ত্রাসীরা আস্কারা পেয়ে আরো এমন হুমকি দেয়ার সাহস পাচ্ছে।
এদিকে ইমাম উমর ফারুক হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিন পর হয়ে গেলেও পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি। কোনো আসামী আটক তো দুরে থাকুক আসামীদের সনাক্ত করতেও সক্ষম হয়নি। স্থানীয় নও মুসলিমদের অভিযোগে, ১৮ জুন উমর ফারুক হত্যাকাণ্ডের পরদিন পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যাওয়ার পর এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আর ঘটনাস্থলে আসেনি।তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদ হোসেন। উমর ফারুকের স্ত্রী রাবেয়া বেগম ত্রিপুরা মামলার এজাহারে সুস্পষ্ট ভাষায় ‘অজ্ঞাতনামা ৪/৫জন জেএসএস পাহাড়ী সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত আসামী সনাক্ত করতে পারেনি।
সম্প্রীতির বান্দরবানের অন্তর্ভূক্ত উপজেলা রোয়াংছড়ি অত্যন্ত দূর্গম। বান্দরবান থেকে পূর্ব দিকে অবস্থিত রোয়াংছড়ি উপজেলায় সড়ক পথে ২২ কি.মি. যেতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা। আলোচিত তুলাছড়ি গ্রাম রোয়াংছড়ি উপজেলার ৩ নং আলেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত। উপজেলা সদর থেকে পূর্বদিকে ১৮ কি.মি দুরে অবস্থিত এই গ্রামে যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। ১৮ কি.মি. এর মধ্যে ১০ কি.মি. পর্যন্ত সিএনজি, মটর সাইকেলে যাওয়া গেলেও বাকি ৮ কি.মি. দূর্গম পাহাড়ি রাস্তায় অনেকগুলো উঁচু পাহাড় ডিঙিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। এই দূর্গমতার কারণে এলাকাটি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বলা চলে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে তুলাছড়ি থেকে ৩ কি.মি. দুরে লংলাইয়ে অবস্থিত সেনাক্যাম্পই একমাত্র ভরসা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন