হাওরে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হচ্ছে উড়ালসড়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম ৩০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক গত বছরের অক্টোবরে উদ্বোধন করা হয়েছে। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮৭৪ কোটি টাকা। সড়কটি নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। তবে বিপুল পরিমাণ অর্থ বয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হলেও কিশোরগঞ্জ সদরসহ সারা দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়নি।
বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক বেশি চলাচল করছে। এ অবস্থায় কিশোরগঞ্জের এ হাওর সড়কের অপূর্ণতা ঢাকতে নির্মাণ করা হবে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক-তাতে ব্যয় হবে কমপক্ষে চার হাজার কোটি টাকা। এবার উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হবে বাংলাদেশ সেতু বিভাগের অধীনে। প্রকল্পের পুরো ব্যয়ভার বহন করবে সরকার।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ইচ্ছায় ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের মধ্যে ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে এ সড়কের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি। এ সড়কের সঙ্গে কিশোরগঞ্জ ও সারা দেশের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের আগ্রহের কথা রাষ্ট্রপতিই জানিয়েছিলেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশ সেতু বিভাগ এই উড়ালসড়ক নির্মাণে তৎপর হয়। গত বছরের ৮ অক্টোবর ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম ৩০ কিলোমিটার সড়ক উদ্বোধন হয়। এরপর ওই বছরই বাংলাদেশ সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা তিন দফা ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। গত মঙ্গলবারও (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ সেতু বিভাগ ও বুয়েটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে প্রকল্প এলাকার মাটি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এবার ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে উড়ালসড়কটি। মিঠামইন সদর থেকে শুরু হয়ে নিকলীর ভাটিবরাটিয়ার ওপর দিয়ে করিমগঞ্জের মরিচখালী এলাকার খয়রত গ্রামে শেষ হবে। সেখান থেকে প্রশস্ত সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে জেলা সদর। এই উড়ালসড়কের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নির্মাণাধীন সেনানিবাসকেও যুক্ত করা হবে। এই উড়াল সড়ক প্রকল্পের অধীনে মরিচখালী থেকে কিশোরগঞ্জ সদরের নাকভাঙা পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করা হবে। গত বছরের ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সেতু বিভাগের ছয় সদস্যের দল প্রকল্পের সম্ভাব্য এলাকা পরিদর্শন করে উড়ালসড়কের তিনটি সম্ভাব্য পথের প্রস্তাব করেছিল। তার মধ্যে ছিল মরিচখালী-ভাটিবরাটিয়া-মিঠামইন পথ।
প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা বিষয়ে সেতু বিভাগ গত মঙ্গলবার দুপুরে করিমগঞ্জের মরিচখালী বাজারে অংশীজনদের সঙ্গে অবহিতকরণ সভা করে। তাতে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
প্রকল্পের নকশা তৈরি ও অন্যান্য পরিকল্পনা তৈরি করবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল। এই দলটি পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। গত মঙ্গলবার অন্যদের সঙ্গে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিশেষজ্ঞ, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক খান এম আমানত। ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণে হাওরের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক খান এম আমানত। তার মতে, হাওরে সড়ক নির্মাণ করায় পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এজন্য উড়ালসড়কের মাধ্যমে সংযোগই শ্রেয়।
উল্লেখ্য, ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামে হাওরের বুকে নান্দনিক সড়কটি গত বছরের ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন