‘হাইড্রোলিক হর্ন যন্ত্রণা দিচ্ছে, চালকদের বেপরোয়া করছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক: হাইড্রোলিক হর্নের যন্ত্রণার পাশাপাশি উচ্চ শব্দের হুটার বা সাইরেনের অহেতুক ব্যবহার মানুষের অস্বস্তির কারণ হচ্ছে।
গতকাল শনিবার নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা হাইড্রোলিক হর্নের যত্রতত্র ব্যবহারে অতিষ্ট হওয়ার কথা তুলে ধরে তা বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদক্ষেপ চেয়েছেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নিসচার উপদেষ্টা ম হামিদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এটা চালকদের ঔদ্ধত্য বাড়িয়ে দেয়, তাদের বেপরোয়া করে তোলে।“
পরে নিজের বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ম হামিদ যথার্থই বলেছেন। এর আগে ঢাকার পুলিশ কমিশনারের আহ্বানে অনেক গাড়িচালক ও মালিক হাইড্রোলিক হর্ন খুলে ফেলেছিলেন।
এখন তা কেন আবার যুক্ত করা হচ্ছে তার কারণ তিনি খুঁজে দেখবেন। তিনি বলেন, “হাইড্রোলিক হর্নের পাশাপাশি উচ্চ শব্দের হুটার বা সাইরেনের অহেতুক ব্যবহার মানুষের অস্বস্তির কারণ হচ্ছে।“
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ধানম-ির যে বাসায় থাকি, সরকারি বাসা সেখানে রাত আড়াইটার সময় শুনি ট্যা ট্যা শব্দ। একটা অ্যাম্বুলেন্স বোধ হয় যাচ্ছে।
“অথচ রাস্তা ফাঁকা, কোনো পথচারী নেই। তবুও সে সাইরেন বাজিয়েই চলেছে। আমাদের ঘুম ভাঙাল, পথচারী বা অন্য যারা রয়েছে কারও প্রতি ন্যূনতম ভ্রুক্ষেপ নেই।“
আন্দোলন শুরুর সময়কার স্মৃতিচারণ করে ইলিয়াস বলেন, “তখন লোকে আমাকে পাগল বলেছিল। বলেছিল বউয়ের (মৃত্যু) শোকে আমি পাগল হয়ে গেছি। আমাকে অনেকে বোঝাতে এসেছিলেন যে দুর্ঘটনা হলো কপালের লিখন।
“কিন্তু এই ২৮ বছর পর এসে এখন সবাই জানেন দুর্ঘটনার কারণগুলো। এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে আসবে। আমরা এ কথাটাই সবাইকে বলতে চাই, বোঝাতে চাই।“
ইলিয়াস পরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবহন কর্মীদের সন্তানদের অর্ধেক খরচে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান।
নিসচার উপদেষ্টা ম হামিদ বলেন, হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের বিষয়ে হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। ফলে যাদের জন্য এসব নির্দেশনা জারি হয় তারা অনেক বেশি দুঃসাহসী হয়ে ওঠেন।
“আমাদের গাড়ির চালক ও মালিকদের ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে। যত আইনই করা হোক না কেন তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারেন, দেখিয়ে যাচ্ছেন। গভীর রাতেও হর্ন বাজিয়ে চলেছেন চালকেরা। ছোট শিশুরা কেঁদে উঠছে।“
এমন প্রবণতায় একসময় সবাই অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে হতাশার সুরে তিনি বলেন, সবাই ধরে নিচ্ছে যে এভাবেই আমাদের জীবন কাটবে। হাইড্রোলিক হর্নটা রাস্তার মধ্যে মানুষকে যেন ধমক দিয়ে বলে, ‘এই তুই সর এখান থেকে, আমি আসছি’।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন