রাবার ড্যাম সেতুর সুফল ভোগ করবে বান্দরবান
বান্দরবান সংবাদাদাতা: বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় সুয়ালক খালের ওপর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে ৪৫ মিটার দীর্ঘ রাবার ড্যাম ও সেতু। ফলে চাষাবাদের আওতায় আসবে খালের দুই পাড়ের ৭০০ হেক্টর অনাবাদি কৃষিজমি আর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে দুই পাড়ের শতাধিক ঘরবাড়ি।
ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ৯৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন অপেক্ষা রাবার ড্যামটি উদ্বোধনের। প্রতিবছর শীত মৌসুমে সেচসুবিধা না থাকায় সুলতানপুর ও পুরানগড় এলাকার কৃষকরা পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারতেন না।
শুধু তা-ই নয়, বর্ষায় খালের পানি বেড়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ব্যবসায়ী, কৃষকসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য বাজারে আনা-নেওয়াও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত।
জরুরি প্রয়োজন ও রোগী বহনে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হতো স্থানীয়দের। কিন্তু রাবার ড্যামটি নির্মিত হওয়ায় চাষাবাদের আওতায় এসেছে সুলতানপুর ও আশপাশের এলাকার প্রায় বহু অনাবাদি জমি। খালের দুই পাড়ে সিমেন্টের তৈরি ৫০ হাজার ব্লক দিয়ে বাধ তৈরি করায় ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে দুই পাড়ের শতাধিক বাড়িঘর।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) তথ্যমতে, ২০১৯ সালে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় সুয়ালক খালের ওপর ৪.৫ মিটার প্রস্থ ও ৪৫ মিটার দীর্ঘ রাবার ড্যামটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে যৌথ উদ্যোগে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) নির্মাণকাজটির দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমকে অ্যান্ড এসই। এখন স্থানীয় কৃষকদের পানির অভাবে কোনো মৌসুমেই আবাদ বন্ধ রাখতে হবে না না। অন্যদিকে, স্থানীয় জেলেরাও সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।
বান্দরবান সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, আমার চার বিঘা জমি আছে। সেচের অভাবে দীর্ঘদিন সেই জমি সব মৌসুমে চাষ করতে পারিনি। রাবার ড্যাম চালু হলে এখন যেকোনো মৌসুমে চাষ করতে পারব।
সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা জানায়, রাবার ড্যাম চালু হলে সবচেয়ে বেশি সুফল পাবেন স্থানীয় কৃষকরা। সুয়ালক ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় শত শত হেক্টর ফসলি জমি সেচের অভাবে অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকত। এখন তা আর হবে না। ফসল ফলবে। এতে স্থানীয় কৃষক পরিবারে আসবে সচ্ছলতা।
বান্দরবান বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী আবু নাইম বলেন, ইতোমধ্যে রাবার ড্যামটির ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে খালের দুই পাড়ে ব্লক বসানোর কাজ। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হলে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাবার ড্যামটি চালু হলে বর্ষায় রাবার ড্যামের মাধ্যমে একদিকে পানি সংরক্ষণ করে সেচ-সুবিধা পাবে কৃষকরা, অন্যদিকে সেতুর কারণে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত-সুবিধা বৃদ্ধির ফলে স্থানীয়দের জীবনমানে পরিবর্তন আসবে। নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে দুই পাড়ের মানুষ।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন