ভাতের প্রসঙ্গই আনিনি : কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মানুষ ভাত বেশি খায়, এজন্য চালের দাম বেড়ে গেছে’- গণমাধ্যমে এমন কোনো কথা বলেননি বলে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘এ ধরনের কথা আমি কোনো দিনই বলিনি। আমি এ প্রসঙ্গই আনিনি আমি পুষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার কথা বলেছিলাম।’
শুক্রবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।সেমিনারের বিষয় ছিল ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ২০২১ : বাংলাদেশে প্রত্যাশা।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ধানের জাত এবং চাষাবাদ কী হওয়া উচিত, সেগুলোর ওপর আমাদের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। আমরা আমরা চাল জাতীয় খাবারে অনেকটা আত্মনির্ভরশীল। যদি ভালো আবহাওয়া থাকে, আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। আমরা খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকি। কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য হলো পুষ্টি জাতীয় খাবার।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছি, আমরা পুষ্টি জাতীয় খাবার এবং সি ফুড মানুষকে দেবো। এটাই এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ। এজন্য কৃষিকে আধুনিকীকরণ করতে হবে। আমরা যান্ত্রিকীকরণ করছি। আমাদের কৃষকদের আয় বাড়াতে হবে, তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে হবে।
‘সাংবাদিকদের ফোরামে একথা আমি আরেকদিন বলেছি। ৭৭টি মিডিয়া আমার বক্তব্য কাভার করেছে। একটি ভূইফোঁড় পত্রিকা তারা নিউজ করেছে আমি নাকি বলেছি, মানুষ ভাত বেশি খায় এ জন্য চালের দাম বেড়ে গেছে। এ ধরনের কথা আমি কোনো দিনই বলিনি। আমি এ প্রসঙ্গই আনিনি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল ও মেধাবী করতে পুষ্টি জাতীয় খাবার দিতে হবে। জাপান চার বেলা ভাত খায়, কিন্তু তাদের কনজানশন ২ গ্রামেরও কম। সেখানে আমরা আগে ৪৩০ গ্রাম খেলাম এখন এটা কমে ৩৭০ গ্রামে আসছে। ধীরে ধীরে কমছে। মানুষের যেহেতু আয় বাড়ছে মানুষ এখন শাক সবজি, ফলমূল, ডিম, মাছ-মাংসের দিকেই বেশি যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ এখন আর বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল নয় বলেও উল্লেখ করে তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এখন আর ওইভাবে সাহায্য নিতে হয় না। বিদেশি অনেক অর্থনীতিবিদদের আমাদের নেত্রী আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা কৌশলগত পরিকল্পনা করেছি। আমরা যখন সরকারে এসেছি তখন থেকেই এগুলো শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা বিআর-৬৭ নামে একটা জাত আবিষ্কার করেছে। ইনশাল্লাহ এটা কোস্টাল এরিয়াতে হবে। আমরা গমের জাত আবিষ্কার করছি, যা উষ্ণ অবস্থার মধ্যে অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তন হোক আর না হোক আমরা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ড. খন্দকার বজলুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ-কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন।
এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশে সেন্ট্রার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সিনিয়র সাংবাদিক কাওসার রহমান। সেমিনারের সঞ্চালনা করেন ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন