পাঁচ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ সড়ক দুর্ঘটনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে উদ্বেগজনক জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে সামনে চলে এসেছে। দেশে পাঁচ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিবছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের সময়মতো হাসপাতালে না নিতে পারার কারণে তার চেয়েও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমাতে দুর্ঘটনা পরবর্তী তাৎক্ষণিক সেবা প্রদানের বিষয়ে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) অনুষ্ঠিত ‘স্বাস্থ্যখাতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রভাব এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সেমিনারটি আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যখাতের ওপর চাপ কমাতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে স্বাস্থ্যখাতে বাজেটের ওপর চাপ কমবে এবং হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বাড়বে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সমাধান নয়। বরং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের আরও সোচ্চার হতে হবে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমাতে পারলেই আমরা নিজেদের সফল হিসেবে দাবি করতে পারবো।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোনায়েম হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থোপেডিক সোসাইটির সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে এটি নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় কাজ করে। অথচ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনের আওতায়ও সড়ক রয়েছে। ফলে সড়ককে আরও নিরাপদ করতে হলে সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে।
সেমিনারে স্বাস্থ্যখাতের ওপর সড়ক দুর্ঘটনার প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব এবং নিটোরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী)। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের ওপর অতিরিক্ত রোগীর চাপ কমাতে হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য জাতিসংঘের রোড সেফটি গাইডলাইন অনুসরণ করা জরুরি। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমাতে পোস্ট ক্র্যাশ ম্যানেজমেন্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ রোড সেফটি কোয়ালিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন