তিন মাস না যেতেই ভেঙে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর
মুন্সিগঞ্জ সংবাদদাতা: গজারিয়ায় ধসে পড়েছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। নির্মাণের তিন মাস না যেতেই এক লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঘরটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটল।
একই সঙ্গে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ওই স্থানের আরও কয়েকটি ঘর। এতে কাজের মান এবং ঘর নির্মাণের স্থান নির্বাচন নিয়ে উপকারভোগী ও স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৫০টি ঘর নির্মাণ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এর মধ্যে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামে ৪৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকায় ২৮টি ঘর নির্মাণ হয় মার্চ মাসের শেষ দিকে। নির্মাণ শেষে ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়। এখনো সবগুলো ঘরে বসবাস শুরু করেননি উপকারভোগীরা।
এদিকে নির্মাণের তিন মাস যেতে না যেতেই গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে গত জুমুয়াবার (২ জুলাই) সকালে বড়রায়পাড়া প্রকল্পের ২৭ নং ঘরটির একাংশ এবং একটি কলাম ভেঙে পড়ে। পাশের ২৮ নম্বর ঘরটিরও একই অবস্থা। ঘরের নিচে মাটি সরে যাওয়ায় যেকোনো সময় সেটাও ভেঙে পড়তে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি ঘর ভাঙনের পর এখন ঝুঁকিতে রয়েছে একই সারির অন্তত ছয়টি ঘর।
স্থানীয়রা জানান, সরকারি অনেক খাসজমি থাকা সত্ত্বেও বড় রায়পাড়ায় নদীর ধারে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। যেকোনো সময় বন্যা এবং বৃষ্টিপাতে সেগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভেঙে যাওয়া ঘরটির মালিক ওমর আলী। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে ২৮টি ঘর নির্মাণ হলেও এখন পর্যন্ত পাঁচটি পরিবার সেখানে থাকছেন বলে উপকারভোগীরা জানান। তারা জানান, বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং রান্না করার ব্যবস্থা না থাকায় প্রকল্পে থাকা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বড় রায়পাড়ায় বালির ওপর তিন সারিতে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। বৃষ্টির পানি প্রকল্পের মাঝ বরাবর গিয়ে শেষ ঘরের পাশ দিয়ে নিষ্কাশনের সময় বালি সরে গর্ত তৈরি হয়। এতে একটি ঘরের বারান্দার কিছু অংশ ও একটি কলাম ধসে পড়ে। ওই ঘরটিতে কোনো লোকজন ছিল না। লোক থাকলে হয়তো তারা দেখে রাখতো। আমরা ধসেপড়া ঘরটি মেরামত করে দিচ্ছি।’
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ওই স্থান দিয়ে পানির ঢল ছুটে যাওয়ায় ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণকাজে কোনো বিচ্যুতি হয়নি। সবগুলো ঘরই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় এখনো অনেক পরিবার ওঠেনি। পরিবারগুলো সেখানে আসতে শুরু করেছে। শিগগিরই বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।’
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন