এমপি কোটার লাখ টাকা প্রকল্পে নামমাত্র কাজ!
মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বরুনিয়া এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা-খাদ্যশস্য/নগদ অর্থ) কর্মসূচি অর্থবছর ২০২১-২০২২ সনের প্রথম পর্যায়ে কাজ করে টাকা আত্মসাৎ করেছে এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের সভাপতির বিরুদ্ধে।
বরুনিয়া দুঃখী রামের বাড়ির মোড় হতে ভাষান মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার পুনর্নির্মাণে প্রকল্পের কাজের শুরুর তারিখ চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং কাজ শেষ হয় চলতি মাসের ১৫ মার্চ।
এমপি কোটার কাজের প্রকল্পের পরিমাণ ৯ লাখ ৫০ হাজার আর এই প্রল্পের বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মোক্তার আলী। সদর উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তার সহায়তায় প্রকল্পের সভাপতি নিজেই ঠিকাদার হয়ে কাজ করে চেক নিয়েছেন এমনটাই দাবি ওই সদস্যের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বরুনিয়া দুঃখী রামের বাড়ির মোড় থেকে ভাষান মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার পুনর্র্নিমাণ করার জন্য মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প দিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজটি শুরু হয় আর শেষ হয় চলতি মাসের ১৫ তারিখে। নিয়ম অনুযায়ী একটি কমিটি করে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা-খাদ্যশস্য/নগদ অর্থ) কর্মসূচির আওতার কাজটি করার কথা কিন্তু প্রকল্পের সভাপতি নিজেই এককভাবে ভেকু দিয়ে অন্যের জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে কাজ করে চেক নিয়েছেন। এমপি কোটার কাজের বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা কেউই জানেন না, সবাই জানেন মোক্তার আলী পুনরায় মেম্বার নির্বাচিত হওয়াতে সে নিজ অর্থায়নে রাস্তা করে দিচ্ছে। পুনর্নির্মাণ রাস্তার উচ্চতা ৪ ফিট প্রস্থ ১২ ফিট এবং দৈর্ঘ্য ২১শ’ মিটার কিন্তু সরেজমিনে তার কোনো চিত্র দেখা মেলে না আর। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার স্থানীয়দের ভিতর ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বরুনিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা আসলে মেম্বার নিজে করেছে তার ব্যক্তিগত স্বার্থে কারণ হলো তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য ভালো একটা রাস্তা প্রয়োজন আর সেজন্য তার বাড়ির আশেপাশের জমি থেকে তেমন মাটি না কেটে ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলেছে আর তার বাড়ির পর থেকে সরকারি জমি থেকে মাটি না কেটে অন্যদের জমি থেকে জোর করে ১৫ ফিট গভীর করে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলেছে। যারা বাঁধা কিংবা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছে তাদের মানিকগঞ্জ থেকে সন্ত্রাসী এনে ভয়ভীতি ও মারধর করেছে। আমরা অসহায় দরিদ্র মানুষ হওয়ায় মোক্তার মেম্বারের দেওয়া এই যন্ত্রণা সহ্য করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, আমি গত মাসে হঠাৎ করে জমি দেখতে যাই তখন দেখি আমার জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে আর মাটি কাটতে বাঁধা দিলে ভেকুর চালক আমাকে মারধর করে। সরকারি জমি থেকে মাটি না কেটে জোর করে আমার জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তার উপর ফেলেছে কিন্তু যেভাবে রাস্তার উপর মাটি ফেলেছে, বৃষ্টি হলে এ মাটি থাকবে না শতভাগ, লাখ লাখ টাকা জলে যাবে।
ভারারিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি আব্দুল রউফ বলেন, এই ওয়ার্ডের মেম্বার মোক্তার আলী এই ২১শ’ মিটার রাস্তার করেছে এমপি কোটার টাকা দিয়ে এ বিষয়টি আমরা জানতাম না। জনগণের কষ্টের কথা চিন্তা করে আমি এই রাস্তা করে দিলাম। এই রাস্তার জন্য এতো টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এমপি মহোদয় কিন্তু ৫ ভাগের এক ভাগের টাকাও খরচ না করে পুরো টাকা সে মেরে দিয়েছে। আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তা না হলে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন