একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ হবে : টিপু মুনশি
নিউজ ডেস্ক: একাত্তরের পরাজিত অপশক্তিকে রুখে দিতে দেশে আরেকটা যুদ্ধের জন্য যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি।
তিনি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত একাত্তরের পরাজিত শক্তির প্রতিভূ। এই অপশক্তিকে রুখে দিতে আরেকবার যুদ্ধ দরকার। পরাজিত শক্তিকে আবার পরাজিত করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যেন মাথা চাড়া দিতে না পারে এজন্য যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে যুবলীগকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। পরাজিত শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শ্রী রমেশ চন্দ্র সেন, শাজাহান খান, বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্সি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, সাবেক সংসদ সদস্য ও কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, এদেশ নিয়ে সবসময়ই ষড়যন্ত্র হয়ে আসছে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, তারা এখনো এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সব ষড়যন্ত্রের জবাব জনগণ দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। এখন আর কোনো ষড়যন্ত্রকারীকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এদেশকে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের জন্য, আওয়ামী লীগের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে লড়তে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর আরেক সদস্য শাজাহান খান বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতকে নির্মূল করতে আমাদের শপথ নিতে হবে। যুবলীগ এবং যুবসমাজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ থেকে রাজপথে লড়তে হবে। শুধু বিএনপি-জামায়াত নয়, এখন আন্তর্জাতিক অপশক্তিও বাংলাদেশ নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সময় এসেছে এই অপশক্তিদের রুখে দেওয়া।
তিনি বলেন, বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম নাকি মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন, এর উত্তর আছে কী? ফখরুলের বাবা মুসলিম লীগ করতেন। পাকিস্তানের পিস কমিটিতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ফখরুল এখন উন্মাদ। কখন কি বলছেন তা ঠিক নেই। ফখরুল নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করতে করতে এখন খালেদা জিয়াকেও মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন। আবার তারেক রহমান নাকি শিশু মুক্তিযোদ্ধা, সেটাও বলছে। এমন উন্মাদনা আগে দেখেনি।
এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, বিএনপি এখন মিছিল সমাবেশ করছে। আমরা বলছি এখন যত মিছিল সমাবেশ করার ইচ্ছে করে নেন। আগামী ১১ নভেম্বর যুবলীগ সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। ওইদিনের পর সারাদেশের যুবলীগ রাজপথে থাকবে। তখন দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপির সমাবেশে হলে পরিবহন ধর্মঘট আওয়ামী লীগ দেয় না। এই ধর্মঘট দেন পরিবহন শ্রমিকরা। কারণ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা জানে বিএনপি অতীতে আন্দোলন সমাবেশের নামে জ্বালাও পোড়াও করেছে, ভাঙচুর করেছে। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এ কারণে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা বিএনপির হামলা ভাঙচুরের ভয়ে পরিবহন ধর্মঘট দেন। তারা ভয়ে গাড়ি বের করেন না। বিএনপির ভয়ে মানুষ ঘর থেকে বের হতে চায় না।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য একেএম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মণ্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একেএম ছায়াৎ হোসেন বকুল।
এছাড়াও বক্তব্য দেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল পারভেজ, সহ-সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সঞ্চালনা করেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শেখ সাদি, কামরুজ্জামান শাহিন, বাবু লক্ষ্মীন চন্দ্র দাস ও ডা. লুৎফে আলী রনি।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। দীর্ঘ ২৬ বছর পর অনুষ্ঠিত রংপুর জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যুবলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। সকাল থেকেই রংপুরের আট উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও পৌর কমিটির নেতা-কর্মীরা সম্মেলনস্থলে এসে উপস্থিত হন। বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। এরপর বিকেল ৫টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পদপ্রত্যাশী ও কাউন্সিলরদের নিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন করা হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন