হিমাগার না থাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আনারস
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন জেলায় আনারসের ব্যাপক আবাদ হয়। এরমধ্যে সিলেট বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নরসিংদী ইত্যাদি এলাকাতেই বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক আনারসের আবাদ হয়।
প্রতিবছরই স্থানীয় চাষিরা আনারস বিক্রি করে বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করে থাকেন। স্বাভাবিক সময়ে আনারসগুলো জেলার বাইরে গেলেও নানা কারণে অন্যান্য এলাকার লোকজন এ আনারসের স্বাদ তেমন একটা নিতে পারেননা।
যে কারণে ফলন ভালো হলেও চাহিদা না থাকায় কম দামেই আনারস বিক্রি করতে হয়েছে চাষিদের। আর এ অবস্থায় তারা যার যার এলাকায় কমপক্ষে একটি করে হিমাগার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। এ দাবি তাদের দীর্ঘদিনের।
শ্রীমঙ্গলের আড়ৎ ব্যবসায়ী উদয় বাণিজ্যালয়ের মালিক আরিফ আহমদ বলেন, এবার আনারসের ফলন ভালো হলেও ব্যবসায়ীরা বিপদে আছি। দেশে লকডাউনের কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা আনারস কিনতে আসেননি। ফলে অনেক ফল আমাদের নষ্ট হয়েছে। বাধ্য হয়ে কম দামে খুচরা বিক্রি করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের। যাতে আনারস বা অন্যন্য মৌসুমি ফল সংরক্ষণ করে রাখা যাবে । সংরক্ষণ না করতে পারায় প্রতি বছরের মতো এবারও বেশ লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের।
মোহাজেরাবাদের আনারস চাষি সেলিম মিয়া বলেন, আমরা একশ আনারস বিক্রি করি ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখানকার উৎপাদিত আনারস বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা সদর ছাড়াও সিলেট, সুনামগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জে পাঠাচ্ছি।
লকডাউনের কারণে অন্য কোনো জেলায় আনারস পাঠানো যাচ্ছে না। সে কারণে আমাদের কিছু আনারস এবার নষ্ট হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুর বারী বলেন, জেলায় গতবারের চেয়ে আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। আনারস দ্রুত পচে যায়। যে কারণে স্থানীয়ভাবে হিমাগার না থাকায় চাষিদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। শ্রীমঙ্গলে যদি কোল্ড স্টোরেজ ও প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে ওঠতো, তাহলে ব্যবসায়ী এবং চাষিদের সুবিধা হতো। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের রাবান, বরাব, সাতটেকিয়া, কুড়াইতলীসহ আরো কয়েকটি গ্রামে আনারসের চাষ হয়ে থাকে। চলতি বছর রাবানে ১৪৫ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩ হেক্টর বেশি। প্রতি হেক্টরে ১২ টন আনারসের ফলন হয়েছে। রাবানে চলতি বছর ১ হাজার ৭৪০ মেট্রিক টন আনারসের ফলন হয়েছে।
এখানের চাষীরা জানান, আনারস পচনশীল ফল হওয়া সত্বেও এর কোনো সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেই। সংরক্ষণ করতে পারলে আরও লাভ হতো। এ জন্য একটি হিমাগারের প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কৃষকদের আনারস সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগার স্থাপন করে দিলে বড় উপকার হতো।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন