মুসলিম দেশ হিসেবে পয়লা বৈশাখে যা করা হচ্ছে, তা ইসলামবিরোধী : শাহ মোয়াজ্জেম
সাস নিউজ : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বৈশাখের নামে অপসংস্কৃতির উদযাপনের চর্চা হচ্ছে । একটি দেশকে ধ্বংস করতে হলে তার সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিতে হয়। এখন সেটিই চলছে’।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ব্যানারে একটি সংগঠন ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এই যে পয়লা বৈশাখ গেল, কোথাও কোরআন তেলাওয়াত হয়েছে? আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে?… মূর্তি, বাঘ, কুমির, মানুষের মুখোশ… এগুলো কী? অপসংস্কৃতি। একটি মুসলিম দেশ হিসেবে পয়লা বৈশাখে যা করা হচ্ছে, তা ইসলামবিরোধী। মাথায় ভারতীয় ঘা ধরেছে। এতে পঁচন শুরু হয়েছে।’
শাহ মোয়াজ্জেম আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। ইন্দোনেশিয়ার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। গণতন্ত্র বলেন, আর নববর্ষ বলেন, মুসলমানদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি জাতিকে ধ্বংস করতে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করলেই হয়। উর্দু সংস্কৃতি এ দেশে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিল, পারেনি। বাংলাই আমাদের সংস্কৃতি। কিন্তু এখন? ভারতীয় সংস্কৃতি ঢুকে যাচ্ছে।’এ সময় রিজার্ভ চুরিসহ বেশ কিছু সমসাময়িক বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। এ ছাড়া ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার না যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই নেতা।ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা (ভারত) সব নেবে। বন্দর নেবে, বিদ্যুৎ নেবে, করিডোর নেবে; বাংলাদেশ কিছুই পাবে না।’
রাজপথের পরিবর্তে আন্দোলন এখন হল রুম ও ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে, এ মন্তব্য করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে আমরা এখন কথা বলছি, সেমিনার করছি। এরপর যে যার মতো বাসায় চলেও যাচ্ছি। অথচ রাজপথের আন্দোলনে কাউকে পাওয়া যায় না। আন্দোলন এখন হল রুম ও ঘরের মধ্যে বসেই হচ্ছে, রাজপথে নয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ এখন জনগণের সেবক নয়। তারা এক ব্যক্তি ও একটি দলের সেবক হয়ে গেছে। ফলে এক ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে বেপরোয়া আচরণ করছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অনেকে বক্তৃতা করে গলা ফাটিয়ে ফেলেন। নেত্রীর (খালেদা জিয়া) জন্য জান দিয়ে দেন। অথচ নেত্রী যখন গুলশানে অবরুদ্ধ ছিলেন, নেত্রীর খোঁজ নিতে তাদের কাউকেই তখন সেখানে যেতে দেখা যায়নি। যদি শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে এটা হতো, তাহলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিনা চ্যালেঞ্জে তা ছেড়ে দিত না।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘নেত্রী হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু নেত্রীর ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলের একজন লোকও হেফাজতের পাশে দাঁড়ায়নি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’অনুষ্ঠানে ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’র ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের পরিবর্তে ৪৫০ আসন করাসহ দেশ ও জাতির উদ্দেশে ১৫টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’র আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মফিজুর রহমান লিটনের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী, জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন