জোর করে দাড়ি কামিয়ে দিচ্ছে পুলিশ
দাড়ি রাখলেই এখন বিপদ তাজিকিস্তানে। দাড়ি রাখার কারণে হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। দাড়িওয়ালা লোক দেখলেই তাকে ধরে নিয়ে জোর করে দাড়ি কামিয়ে দেয়া হচ্ছে সেখানে।
দেশটির বাসিন্দা জভিদ আকরামভ নামের একজন জানিয়েছেন, গত মাসে তাকে তার সাত বছরের ছেলেসহ ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। রাজধানী দুশনবের একটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গিয়ে জোর করে তার দাড়ি কামিয়ে দেয়া হয়। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘ওরা আমাকে সালাফি বলে আখ্যায়িত করে, আমাকে চরমপন্থি এবং জনগণের শত্রু বলে আখ্যায়িত করে। এরপর তারা আমার দুই হাত ধরে জোর করে আমার দাড়ি কামিয়ে দেয়।’
পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে শুধু খাতলন অঞ্চল থেকে মোট ১৩ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দাড়ি রাখাকে সরকারের পক্ষ থেকে তাজিক সংস্কৃতির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আকরামভের মতো আরো নয়জনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি। তারা সবাই একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। রাস্তা থেকে তাদের জোর করে ধরে হয় পুলিশের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয় অথবা নাপিতের দোকানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের দাড়ি কামিয়ে দেয়া হয়।
আফগানিস্তান, ইরাক কিংবা সিরিয়ার মতো মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও চরমপন্থার দিকে যেতে পারে- এমন ভয় থেকেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে সরকার দাড়ির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে বলে তাজিক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন জরিপ অনুসারে, গত বছরের জুনের মধ্যে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো থেকে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজারের মতো লোক সিরিয়াতে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে। তাজিক সমাজে ইসলামি সংস্কৃতি রুখতে এবং দেশটিতে ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য ধরে রাখার অংশ হিসেবে সরকার এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশটির দাপ্তরিক তথ্য অনুসারে, তাজিক জনগণের মোট ৯৯ শতাংশ মুসলিম। তবে সোভিয়েত ইউনিয়েনের অধীনে থাকার সময় এখানে নাস্তিক্যবাদকে উৎসাহিত করা হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন