আসন্ন বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে মেগা প্রকল্পগুলো
নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থবছরের প্রস্তাবিতব্য বাজেট তৈরির কাজ করছে সরকারমহল। জানা গেছে, আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের মূল আকার দাঁড়াতে পারে সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার খসড়া প্রস্তাব ইতোমধ্যেই অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
যা চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপির তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। উন্নয়ন বরাদ্দের মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থ থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরায় দাঁড় করানোর কর্মপরিকল্পনার পাশাপাশি অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোয়।
জানা গেছে, আসন্ন নতুন এডিপিতে পদ্মা সেতু ও এই সেতুতে রেলসংযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পরিবহন খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এর পরই রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। এই খাতে ২৬ হাজার ১৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট এডিপির ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাত। এই খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ১২ শতাংশ।
দেশের সার্বিক অর্থনীতি একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। এর আঘাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রাক্কলিত হিসাবে চলতি অর্থবছর শেষে জিডিপির প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে। জিডিপি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশ।
বাজেট তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্তরা জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে আগামী বছরের জন্য ব্যক্তি আয়কর সীমা কমানো হবে না। তবে করপোরেট কর হার কিছুটা কমানো হতে পারে। নতুন করারোপ হবে না। ঘোষণা না দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্তি করা হবে। এজন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
নতুন বাজেট সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, আসন্ন নতুন বাজেটে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এসব প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে বাজেটে বরাদ্দ বেশি রাখা হবে। করের হার নতুন করে বাড়ানো হবে না।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায় আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পদ্মা সেতুতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে বরাদ্দ থাকছে ১৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। মেট্রোরেল প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। মহেশখালী মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৬ সালে অনুমোদনের চার বছর পর বঙ্গবন্ধু রেলসেতু প্রকল্পে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন