আম বাজারজাত করার দুশ্চিন্তায় চাষিরা
নওগাঁ সংবাদদাতা: আমের বাজারজাত করা নিয়ে শঙ্কায় আছেন নওগাঁর আমচাষিরা। আপপাড়া শুরু হলেও এখনও জেলার বাইরের পাইকাররা না আসায় আমের নায্যমূল্য পাবেন কিনা ও আমের ঠিকমতো বাজারজাত সম্ভব হবে কিনা তা ভেবে চিন্তায় রয়েছেন জেলার প্রায় ৫০ হাজার আমচাষি।
গত বছর এ জেলায় ১১শ কোটির বেশি টাকার আম বিক্রি হয়েছে। এবছর জেলায় সাত হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। তবে কয়েকদফা লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি নানা সুযোগ দেওয়ার কারণে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন না বলে প্রশাসন মনে করছে।
পোরশা উপজেলার মিনা বাজার এলাকার আমচাষি ও বাগান মালিক মাসুদ পারভেজ বলেন, করোনা এখন পর্যন্ত জেলার বাইরের পাইকাররা না আসায় নায্যমুল্য প্রাপ্তি ও বাজারজাত আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় জেলার প্রায় ৫০ হাজার আম চাষি ও বাগান মালিক।
সাপাহারের আমচাষি সাইদুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছর এ সময়ে আমাদের অর্ধেক আম বাইরের পাইকারের কাছে বেচাকেনা হয়ে থাকে; কিন্তু এ বছর এখনও কোনো পাইকার আসেননি। যদি বাইরের পাইকাররা আসতে না পারেন তাহলে আমাদের খরচই উঠবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, নওগাঁর আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় ও সুমিষ্ট হবার কারণে সারাদেশে জেলার গোপালভোগ, ল্যাংরা, আমরুপালী, নাকফজলী, ফজলী, আশ্বিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জেলার ১১ উপজেলায় আম বাগান করা হলেও পোরশা, সাপাহার, পত্নীতলা ও বদলগাছি উপজেলায় ব্যাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
সিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছর জেলায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সোয়া তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়; যা বিক্রি হয়েছে ১১ শ কৌটি টাকারও বেশি দামে। এবছর জেলায় সাড়ে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার মুকুল কম আসা ও কয়েক দফা ঝড়ে আমের কিছুটা ক্ষতি হলেও মূল উৎপাদনে ঠিক থাকবে; কারণ এবছর আরও সাত হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউনের কারণে পাইকারদের আসা-যাওয়া ব্যাংকে লেনদেনদেনের সময় বাড়ানোসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান এবং আপসের মাধ্যমে আম ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন