জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার পেছনে ‘সরকারের হাত’ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ বলেছেন, আদালতের ধারাবাহিক প্রক্রিয়াতেই ওই রায় এসেছে।
শুক্রবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের এই প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, “সরকারের হাত থাকলে এ রায় সরকারের প্রথম মেয়াদেই হত, দশ বছর পর হত না। কারণ আমরা যে পরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসব, সে গ্যারেন্টিও তো ছিল না। সুতরাং এই রায় আদালতের ধারাবাহিক প্রক্রিয়াই হয়েছে।”
জরুরি অবস্থার সময় দায়ের করা একটি দুর্নীতি মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত। তার ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য ৫ আসামিকে দেওয়া হয় ১০ বছরের সাজা।
ওই রায়কে ‘ফরমায়েশি’ আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ‘নির্বাচনের বাইরে রাখতে ক্ষমতাসীনদের নীল নকশা’ এটা।
এর জবাবে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ বলেন, “এই রায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিষয় নয়, এটা আদালতের বিষয়। এ রায় জনগণের প্রত্যাশিত রায়।
“এই রায় এদেশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে এ কারণে যে, এদেশের মানুষ বুঝে নেবে- আইন সবার জন্য সমান, অন্যায় করে কেউ পার পায় না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না।”
হাছান মাহমুদের ভাষায়, খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতাকর্মীদের কান্না কেবল ‘তাদের স্বজন ও সম্পদের’ জন্য।
“এদেশের মানুষের জন্য তাদের কান্না আসে না। যদি আসত তাহলে তারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও করে অসংখ্য মানুষকে পোড়াত না।”
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা সংশোধনের সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, “দুর্নীতিবাজদের দলে ঠাঁই দিতেই গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনেছে। এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবাজ তারেক রহমানকে।”
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় রায়ের দিন ঠিক হওয়ার পর গত ৩১ জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এরপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ইসিতে গিয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান জানান, বিএনপির কাউন্সিলের নানা সিদ্ধান্ত ও গঠনতন্ত্র সংশোধন বিষয়ে কিছু তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে এসেছিলেন তারা।
ইসির পক্ষ থেকে কিছু সাংবাদিকদের জানানো না হলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন, সিইসির কাছে দেওয়া বিএনপির গঠনতন্ত্রে সপ্তম ধারাটি নেই।
আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই ধারায় বলা ছিল, দণ্ডিত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না, যা এখন বাদ দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই রায়ের আগে সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্ব অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টি-জেপির অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী, সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন