রমজানে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং মোসাদের সাথে যুক্ত সংগঠন নিষিদ্ধ করতে হবে -ওলামা লীগ
সাস নিউজ২৪ ডট কম : আসন্ন মাহে রমজানের সম্মানার্থে সব ধরনের খেলাধুলাসহ অশ্লীলতা-বেহায়াপনা বন্ধ, ইসলাম ধর্ম বিরোধী পাঠ্যসূচি বাতিল, শ্যামল কান্তিকে গ্রেফতার, মোসাদ চক্রান্তে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার, রমজানে সব শিক্ষ প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং দেশ বিরোধী সকল চক্রান্তকারী সংগঠনসমূহ নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবীতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি ইসলামিক দল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে উত্থাপিত অন্যান্য দাবীসমূহ হচ্ছে- রমাদ্বানে দ্রব্যমূল্যে কারসাজীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, পবিত্র ঈদের ছুটি ১০ দিন করা। ফরমালিনের মিথ্যা অভিযোগে দেশীয় আম ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা। ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুতে ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে পুনর্বাসন করা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, কার্যকরী সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটিসহ সমমনা ১৩ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকার বিরোধী তৎপরতায় এদেশের মার্কিনপন্থী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোকে মোসাদ যুক্ত করেছে। এ লক্ষ্যে মোসাদের এজেণ্টরা খালেদাকে ক্ষমতায় আনতে ভারতের সাথে সরকারের সর্ম্পকের অবনতি ঘটাতে মার্কিনপন্থী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে কাজ করছে। বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত এবং ভারতের সাথে সর্ম্পক অবনতিতে কাজ করে যাচ্ছে “বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদ, মার্কিন পন্থী উগ্র হিন্দু ইসকন, হিন্দু সংহতি ইত্যাদিসংগঠনগুলো। এদেশে হিন্দুদের উস্কানী দিতে ও সাম্প্রদায়িক ক্ষেত্র প্রস্তুতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের একটি মহল মনে করেন, হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ বান্ধব- এ মিথ্যা থেকে সরে আসার সময় হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, হিন্দুদের একটি অংশ মার্কিনপন্থী। প্রতিবেশি দেশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার একটি অংশও মার্কিনপন্থী। নাস্তিকদেরও একটি বড় অংশ মার্কিনপন্থী। এজন্য আমেরিকা নাস্তিকদের আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এসব মার্কিন তথা বিএনপিপন্থী হিন্দুরাই বর্তমানে এদেশে হিন্দুদের সম্পদ লুণ্ঠন ও নারী ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ ঢালাওভাবে করে যাচ্ছে। আমেরিকা তাদের ব্যবহার করে মোসাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে। তাই অবিলম্বে সরকারকে মার্কিনপন্থী হিন্দু ও নাস্তিকদের কঠোরভাবে নজরদারীতে আনতে হবে এবং এদের দেশ বিরোধী অপতৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি হিন্দু মানেই আ’লীগ বান্ধব হিন্দু মানেই ভারতপন্থী সেই ধারণা থেকে এখনই বেরিয়ে আসতে হবে।
বক্তারা বলেন, ঢাবি, রাবি, জবিসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফৌজধারী অপরাধী শিক্ষক নামধারীরা শাস্তি পেলেও ধর্মীয় অনুভূতির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে শ্যামল কান্তি’র আঘাত দেয়ার পর্যাপ্ত প্রমাণাদি থাকার পরও তাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছেনা। বরং নাস্তিকপন্থী কিছু মিডিয়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টিই এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ দেশী-বিদেশী মিডিয়ার অনুসন্ধানে শ্যামল কান্তি’র ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ১৮মে’র বিবিসি বাংলা, ১৯ মে’র দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘটিত ১ম তদন্ত কমিটির ভিডিও ক্লিপ, থানার ওসি’র কাছে দেয়া ঐ স্কুলের ২০ ছাত্রের স্বীকারোক্তিতে শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া সাংসদ সেলিম ওসমান সংবাদ সম্মেলনে দলীল-প্রমাণসহ শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রকাশ্যে একজন ড্রাইভারকে রাস্তার মধ্যে কান ধরে উঠবস করালেও তখন মাতামাতি করেনি বামপন্থী ও হিন্দুত্ববাদীরা। কারণ সে ছিল মুসলমান। আর সেলিম ওসমান একজন হিন্দু অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছেন তাই এত মাতামাতি!
বক্তারা বলেন, গত ১২ জানুয়ারি দোলাইরপাড় উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, ০৯ জুলাই ২০১৪ ময়মনসিংহের ভালুকায় শিক্ষককে মারধর করা হয়, ভোলায় বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, কোনো কারণ ছাড়াই গৌরীপুর কলেজ শিক্ষক মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে উলঙ্গ করে ছেলে ক্যাম্পাসে ঘুরানো হয়। তখন তো ইসলাম বিদ্বেষী মহল শিক্ষক অবমাননার নামে আন্দোলনে নামেনি। যখন শিক্ষক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার বিষয়টি এলো তখন শিক্ষক অবমাননার প্রচারণা কি উদ্দেশ্যমূলক নয়?
বক্তারা বলেন, মোসাদের এজেণ্ট শিপন বসুদের মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলোর মদদে দেশের বিভিন্ন স্কুলে অব্যাহতভাবে আল্লাহ পাক এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কটূক্তি কর যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন এর আগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মৌলবাদী হিন্দু শিক্ষক শংকর বিশ্বাস, শরীয়তপুরের জাজিরার জয়নগর জুলমত আলী উচ্চবিদ্যালয়ের তপন চন্দ্র বাড়ৈ, চিতলমারীর হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহলী ও সহকারী শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষালসহ আরো অনেক শিক্ষক নামধারী হিন্দুরা।
বক্তারা আরো বলেন, ফৌজদারী অপরাধকারীরা শিক্ষক উপাধির অনুপযুক্ত। এরা শিক্ষক নামের কলংক। এদের কাছে শিক্ষার্থীদের কিছু শেখার নেই এরা বরং শিক্ষার্থীদের পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী করবে। শ্যামল কান্তি শুধু ধর্মীয় অনুভূতির মতো ফৌজধারী অপরাধেই অপরাধী নয় বরং শিক্ষার্থী নির্যাতনের মতো ফৌজধারী অপরাধেও সে অপরাধী। কেননা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে শারিরিক ও মানসিক আঘাত করা দ-নীয় অপরাধ।
বক্তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ কয়েকদিন আগে বলেছেন, “সব শিক্ষক ধোয়া তুলসি পাতা না।” সে ক্ষেত্রে তাদেরকে যে, শাস্তি দেয়া যাবেনা তা নয়। কারণ ভিকারুন্নেছার পরিমল, চাঁদপুরের অজয় কুমার, চিতলমারীর কৃষ্ণপদ মহলী ও সহকারী শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষাল নামক শিক্ষকদের তো শাস্তির উদাহরণ রয়েছে। কাজেই শিক্ষক তকমা থাকলে তাকে শাস্তি দেয়া যাবেনা, এমন কোন আইন এদেশে নেই। বরং শ্যামল কান্তি’র আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শান মুবারকে অবমাননার বিষয়টি শুধু একজন নয় ক্লাসের কমপক্ষে ২০ জন ছাত্র যেখানে স্বাক্ষী রয়েছে সেখানে শ্যামল কান্তি কে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? সে যদি হিন্দুদের দেবী দূর্গা সম্পর্কে কটুক্তি করতো তখন কি তাকে ছেড়ে দেওয়া হতো? অবিলম্বে ইসলাম অবমাননাকারী শিক্ষক নামধারী শ্যামল কান্তিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
বক্তারা ঈদের ছুটি প্রসঙ্গে বলেন, এদেশের রাষ্ট্রধর্ম হলো ইসলাম। অথচ দুই ঈদে ছুটি দেয়া হয় মাত্র তিন দিন। ফলে দেশের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, পরিবহন সংকট, অসহনীয় যানযট ইত্যাদি কারণে যেতে-আসতেই দুই দিন চলে যায়। তাহলে ঈদের ছুটি থাকে কোথায়? অথচ ইউরোপ-আমেরিকায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব খ্রিষ্টমাস ডে উপলক্ষে মাসব্যাপী ছুটি দিয়ে থাকে। আমাদের দেশেও অবিলম্বে দ্ইু ঈদের ছুটি ১০ দিন দিতে হবে। পাশপাশি পবিত্র রমজান মাস হলো তাক্বওয়া তথা আল্লাহভীতি হাসিলের মাস। এই পবিত্র মাসেও দেশী-বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলো গানবাজনা, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি অশ্লীল অনুষ্টান প্রচারে কুণ্ঠাবোধ করেনা। এসব চ্যানেলগুলো সবাই তথাকথিত আধুনিকতার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় সব মুসলমান যাতে তাক্বওয়া হাসিল করতে পারে তাই অবিলম্বে টিভি-সিনেমাসহ সব ধরনের অশ্লীলতা বন্ধ করতে হবে পাশপাশি সব শিক্ষ প্রতিষ্ঠান মাসব্যাপী ছুটি দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, ধুরন্ধর বামপন্থী নাহিদ তার সারাজীবনের বামচিন্তা তথা ইসলাম বিদ্বেষী চিন্তা ও আদর্শ আওয়ামী লীগের উপর ভর করে পূরণ করে নিয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের ব্যানার ছাড়া ও নৌকা মার্কা ছাড়া একটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জনপ্রিয়তাও তার নেই। বাম রাজনীতির ধারক ও বাহক ইনু-মেনন-নাহিদ-বাদল জোট আওয়ামী লীগের উপর ভর করে তার আদর্শ বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু আওয়ামীলীগের ব্যানর ছাড়া তার কোন জনপ্রিয়তা নেই। তাই আওয়ামী লীগের উপর ভর করা এসব সুবিধা ভোগীদের আদর্শ বাস্তবায়ন করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইনের বিরোধীতা নিয়ে যাতে জামাত জোট তথা ধর্মব্যবসায়ী দল রাজনীতি করতে না পারে সে জন্যই আমরাই প্রথম সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ করেছিলাম।
শিক্ষামন্ত্রী আপনি জামাত-জোটকে শিক্ষানীতি নিয়ে আন্দোলন করার সুযোগ দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে সমাজতন্ত্র কায়েমের নেপথ্য কুশীলব হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু ওলামা লীগ এ ষড়যন্ত্র শক্ত হস্তে নস্যাত করবে। ইনশাল্লাহ!
বক্তারা বলেন, ফরমালিনের নামে দেশীয় আম ধ্বংসে বিগত দুই বছরে কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার আমবাণিজ্য ধ্বংস হয়। ভুক্তভোগীরা পায়নি কোনো ক্ষতিপূরণ। সারাদেশের লাখ লাখ লোক পথে বসে। আমাদের প্রশ্ন হলো- শুধুমাত্র দেশীয় আম বা দেশীয় ফলের মৌসুমে ফরমালিন অভিযান চালানো হয় কেন? ভারতীয় আম বাজারে থাকলেও এখন সে অভিযান নেই কেন? ফরমালিন বিরোধী অভিযান পরিচালনাকারীরা আমদানিকৃত ফলের ক্ষেত্রে অভিযান চালাতে সারাবছরই অন্ধ ও বধির থাকে কেন?
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন