ইসলাম ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত, শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে গণধোলাই
সাস নিউজ২৪ ডট কম : ইসলাম ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করে মন্তব্য এবং শিক্ষার্থীকে প্রহার করায় ব্যাপক জনরোষে পড়ে গণধোলাই খেয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত প্রকাশ্যে এ গণধোলাই খেয়েছেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার ও প্রাণে রক্ষা করে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় উত্তেজিত জনতা ওই শিক্ষককে গণধোলাই দেয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করলেও কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ জনতা বেশ কিছুক্ষণ তাদের ঘেরাও করে রাখে। বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবীব, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুল, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, জেলা জাতীয়পার্টির সভাপতি আবুল জাহের, কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর থানার ওসি আবুল কালামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টায়ও উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে ব্যর্থ হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দাঙ্গা পুলিশ ডাকা হয়। এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এমপি বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ বিলুপ্ত করে ইউএনওর মাধ্যমে নতুন করে পরিচালনা পরিষদ গঠনের নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী সুত্রে জানা গেছে, গত ৮ মে বন্দরের কল্যান্দি এলাকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র রিফাতকে প্রহার করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। সে মার খেয়ে আল্লাহ ও রাসুলের নাম বলে উঠলে প্রধান শিক্ষক তা নিয়ে কটুক্তি করে বলেন- ‘কিসের ইসলাম, তোদের আল্লাহ-নবী নাপাক তোরা মুসলমানরাও নাপাক।’ বেধড়ক পিটুনিতে ছাত্র রিফাত অচেতন হয়ে পড়ে। পরে রিফাতের মা রিনা বেগম তার ছেলেকে এভাবে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় লিখিত ভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদকে অবহিত করেন এবং বিচার দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার বিষয়টি সুরাহার জন্য বিদ্যালয়ে সভা ও সালিশ বৈঠক বসেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। ছাত্র রিফাত তার বক্তব্যে ধর্ম নিয়ে শিক্ষকের কটুক্তির কথা তুলে ধরলে তা শুনে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সভা চলাকালে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়। উত্তেজিত এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানায় ব্যাপক গণধোলাই দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ এসে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে উদ্ধার করলেও উত্তেজিত জনতা প্রায় ৬ ঘন্টা পুলিশ ও শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলের ছাত্রকে পিটিয়ে আহত ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানায় উত্তেজিত জনতা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর সে জনরোষ থেকে রক্ষা পায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন